বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে ৮টি বিভাগীয় শহরে একযোগে অনুষ্ঠিতব্য
‘চতুর্থ বাংলাদেশ স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫’ নিয়ে
সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে ৮টি বিভাগীয় শহরে একযোগে ‘চতুর্থ বাংলাদেশ স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫’ আয়োজন নিয়ে আজ ২৪ মে ২০২৫, শনিবার, বেলা ৩ টায়, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা সেমিনার কক্ষে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সচিব ও দায়িত্বপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেন এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির কর্মকর্তাবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সচিব ও দায়িত্বপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেন জানান যে, “বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে এবং নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের ব্যবস্থাপনায় ৮টি বিভাগীয় শহরে একযোগে ‘চতুর্থ বাংলাদেশ স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫’ আয়োজন করা হবে। শিল্পকলা একাডেমি ইতোপূর্বে ২০১৬, ২০১৮ ও ২০২১ সালে সর্বমোট ৩টি ‘স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র উৎসব’ আয়োজন সম্পন্ন করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ২৭ মে থেকে ৩১ মে ২০২৫ পর্যন্ত ০৫ (পাঁচ) দিনব্যাপী ‘চতুর্থ বাংলাদেশ স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫’ অনুষ্ঠিত হবে। চলচ্চিত্র শিল্পের প্রসার, বিকাশ এবং মানসম্মত দেশীয় স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রক্ষেপন এবং অনুধাবন করাসহ চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট সকলকে উক্ত উৎসবের মাধ্যমে চলচ্চিত্রের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য এবং মানবিক ও সামাজিক মূল্যবোধ সৃষ্টি করাই এ উৎসবের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।”
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির দায়িত্বপ্রাপ্ত মহাপরিচালক আরো বলেন, “উৎসব আয়োজন উপলক্ষ্যে পত্রিকায় বিজ্ঞাপনসহ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে (https://www.facebook.com/ share/18rRQRo4xF/)-এ প্রচারের মাধ্যমে চলচ্চিত্র আহ্বান করা হয় এবং অনলাইনের মাধ্যমে সারাদেশ থেকে উভয় ক্যাটাগরি মিলিয়ে বিভিন্ন দৈর্ঘ্যর মোট ৩২২টি চলচ্চিত্র জমা পড়ে। তবে কিছু চলচ্চিত্র একাধিক বার জমা পড়ায় সর্বশেষ সংখ্যাটি হয় ৩০০। যার মধ্যে ২০৯টি ফিকশন এবং ৯১টি ডকুমেন্টারি। পরবর্তীতে সিলেকশন কমিটির মাধ্যমে প্রথমিক যাচাই বাছাই এর ভিত্তিতে ৮৯টি চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর জন্য নির্বাচন করা হয়। যার মধ্যে ৬০টি ফিকশন এবং ২৯টি প্রামাণ্যচিত্র। প্রদর্শিতব্য চলচ্চিত্র থেকে জুরি কমিটি পুরস্কারের জন্য চূড়ান্তভাবে উভয় ক্যাটাগরি থেকে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র, শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং বিশেষ জুরি নির্ধারণ করবেন। এছাড়া উভয় ক্যাটাগরি থেকে সার্বিকভাবে ৪টি বিশেষ পুরস্কার নির্ধারণ করবেন। এগুলো হলো শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক, শ্রেষ্ঠ সম্পাদনা, শ্রেষ্ঠ শব্দ পরিকল্পনা এবং শ্রেষ্ঠ প্রযোজনা পরিকল্পনা। পুরস্কার এর অর্থ মূল্য হিসেবে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, শ্রেষ্ঠ নির্মাতা ১ লক্ষ টাকা এবং বিশেষ জুরি হিসেবে ৫০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তাছাড়াও বিশেষ পুরস্কার এর অর্থ মূল্য হিসেবে শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক, শ্রেষ্ঠ সম্পাদানা, শ্রেষ্ঠ শব্দ পরিকল্পনা এবং শ্রেষ্ঠ প্রযোজনা পরিকল্পনা হিসেবে প্রতিটির জন্য ৩০ হাজার টাকা করে নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রদর্শিতব্য চলচ্চিত্রের নির্মাতাগণ সবাই প্রদর্শনী সার্টিফিকেটসহ উৎসব স্মারক পাবেন। ৮টি বিভাগীয় শহরে নির্ধারিত শিডিউল অনুযায়ী চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। এছাড়াও উৎসবে প্রদর্শিত চলচ্চিত্র নির্মাতাদের মধ্য থেকে সর্বোচ্চ ৩০ জনকে নিয়ে ৩০ মে ২০২৫, শুক্রবার দিনব্যাপী জাতীয় নাট্যশালার আর্কাইভ রুমে মাস্টার ক্লাস এর আয়োজন করা হবে। মাস্টার ক্লাসের বিষয় হবে সাউন্ড এন্ড সিনেমাটুগ্রাফি। প্রশিক্ষক হিসেবে থাকবেন নাহিদ মাসুদ এবং রাশেদ জামান।”
মহাপরিচালক (দায়িত্বপ্রাপ্ত) আরো জানান যে, “৫ দিনব্যাপী চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী দিনে উদ্বোধক হিসেবে থাকবেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা অনম বিশ্বাস। সমাপনী দিনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার জন্য সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী মহোদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন। সমাপনী এবং উদ্বোধনী উভয় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সচিব ও দায়িত্বপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেন।”
সংবাদ সম্মেলনে ৫ দিনব্যাপী ‘চতুর্থ বাংলাদেশ স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫’-এর সিডিউল প্রকাশ করা হয়। এই উৎসবকে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে সবার নিকট পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে সকল সাংবাদিকগণের এবং বিভিন্ন মিডিয়ার সহযোগিতা কামনা করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক (দায়িত্বপ্রাপ্ত)।
চলচ্চিত্র উৎসবের সার্বিক দায়িত্বে রয়েছেন নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের পরিচালক ফয়েজ জহির এবং সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের সহকারী পরিচালক (চলচ্চিত্র) মো: ইকরামুল ইসলাম।
৫ দিনব্যাপী এই স্বল্পদৈর্ঘ্য ও প্রামাণ্য চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫ সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।